২৫ বৈশাখ, কবিগুরুর জন্মদিন। ভোর হতেই শঙ্খ বেজে ওঠে জোড়াসাঁকোর ঠাকুর বাড়িতে, বিশ্বভারতীর উপাসনা প্রাঙ্গণে তখন ধ্বনিল রে-এর সুর। সেজে ওঠে কবিগুরু বাড়ি, দিনভর অনুষ্ঠানসূচী ফেরে মানুষের হাতে হাতে। রবীন্দ্র সদন থেকে শুরু করে পাড়ার ওলি-গলি, মহাসমারহে পালিত হয় রবীন্দ্র জয়ন্তী। রবীন্দ্র সঙ্গীত থেকে শুরু করে কবিগুরু কবিতা, নৃত্যনাট্যে ভরে ওঠে বাংলার আকাশ-বাতাস।
তবে ২০২০-তে সেই চেনা ছবি আর ধরা দিল না। দীর্ঘ ১৫৯ বছরে এ এক অন্য সকাল। নেই কোনও আড়ম্বর, নেই শয়ে শয়ে ভক্তের ভিড়। রবীন্দ্রজয়ন্তী পালন এ বছর লকডাউনে। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিনে নূন্যতম অনুষ্ঠানের আয়োজন। বন্ধ রাস্তা পথঘাট। নেই জনসংযোগের অনুমতী। যে রবীন্দ্রজয়ন্তী ভক্তদের দূর দূরান্ত থেকে এক ছাদের তলায় নিয়ে আসত, যে ২৫ বৈশাখ জোড়াসাঁকো ঠাকুর বাড়িতে উপচে পড়া ভিড়ের সাক্ষী থাকত আজ তা ম্লান।
যে কবি চার দেওয়ালের গণ্ডি থেকে বেরিয়ে মুক্ত বাতাসে শ্বাস নেওয়ার কথা বলে গিয়েছেন, সেই কবিগুরু স্মরণ এবার কোয়ারেন্টাইনে। জল পড়ে, পাতা নড়ে থেকে শুরু, পনেরো বছর বয়সে বনফুল রচনা করে ফেলেছিলেন তিনি। দেশের সর্বত্র নাম ছড়িয়ে পড়ে এই পনেরো বছরের ভানুসিংহ ঠাকুরের। একের পর এক কালজয়ী রচনা সৃষ্টি হতে থাকে তাঁর কলমের আঁচড়ে। বিশ্বব্যাপী সমাদৃত বিশ্বকবির জন্মদিন পালন করা হয়ে থাকে মহাসমারহে। ১৫৯ তম বছরে এসে চেনা ছবিটা বদলে গেলেও, আবেগ রইল একই, সোশ্যাল মিডিয়ার পাতায় উপচে পড়া রবীন্দ্র জয়ন্তীর শুভেচ্ছাবার্তা, অনলাইনে অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়েই রবীস্মরণে সামিল আপামর বাঙালি।
নি এম/