বাবা মানে আমরা সেই আচ্ছাদনটা বুঝি যেটা আমাদের সারাজীবন ঢেকে রাখে। রোদ গ্রীষ্ম বর্ষা সারাটা সময় ধরে আমাদের মাথার ওপরের ছাতা হয়ে থাকে। নিজের সমস্ত স্বার্থ ত্যাগ করে পরিবারের জন্যে নিজেকে বিলিয়ে দেয়। আজকে সেইরকমই এক বাবার কথা বলব।
দুলাল দাস, বয়স ৭২ বছর। চেহারায় পড়েছে বার্ধক্যের ছাপ। বাবা যতিন দাস ছিলেন এক সময়ের জমিদার। কিন্তু বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করায় দুলাল দাসের জীবনে নেমে আসে দুঃখ আর হতাশা। বঞ্চিত হন সম্পত্তি থেকে। এরপর থেকেই ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন দুলাল।
তিনি বলেন ছেলেবেলায় বাবাকে হারিয়েছি, একসময় ছিলাম জমিদার, আমাদের প্রায় ২০ বিঘে জমি ছিল। কিন্তু বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করার পরেই আমরা বাবার সম্পত্তি থেকে বঞ্ছিত হই। আমাদের তিন ভাই ও পাঁচ বোন। আমার নিজের ছিল তিন সন্তান।
এর পরে এক সময় স্ত্রীও মারা যায়। সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে আর বিয়ে করিনি। অভাবের সংসারে ছেলেদেরও লেখাপড়া করাতে পারিনি।
ছেলেদের বাড়ী করে দেওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন ছোটবেলা থেকেই কষ্ট করেছি। বাবার কাছ থেকে বঞ্চিত হয়েছি। তাই মা হারা তিন ছেলের মনে কষ্ট দেখতে চাই না। সেই কারণেই ১৮ বছর ধরে বিভিন্ন জায়গা থেকে ইট কুড়িয়েছি।
ভ্যান চালিয়ে যে টাকা পেতাম তা দিয়েই ৩০-৪০টি ইট কিনতাম। এসব ইট জোগাড় করেই ছেলেদের জন্য তিনটি বাড়ি করেছি। তিনি বলেন, বাড়িতে আসা-যাওয়ার পথে ২৫ ফুট রাস্তা করার জন্য এরইমধ্যে ইট, খোয়া, বালু ও সিমেন্ট এনে রেখেছি। এ কাজে তিন ছেলেও সমান তালে সহযোগিতা করছেন।
দুলাল দুলাল দাসের বড় ছেলে মিত্র দাস বলেন, এমন বাবা পেয়ে আমরা গর্বিত। আমার বাবা যে দৃষ্টান্ত দেখিয়েছেন তা বিরল। আমরা তার প্রতি কৃতজ্ঞ।
নি এম/
Editor & Publisher : Sukriti Mondal.
E-mail: eibelanews2022@gmail.com