নির্বাচন শেষ হতে না হতেই এক হতদরিদ্র হিন্দু অসীম চন্দ্র শীলকে ক্রিকেটের শক্ত স্ট্যাম্প এবং লোহার পাইপ দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করলেন বরগুনার বামনা উপজেলার রামনা ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতিকের নবনির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম জোমাদ্দার। নির্বাচনে ভোট না দেওয়ায় অসীম চন্দ্র শীলের পরিবার সহ একাধিক হিন্দু পরিবারকে গ্রাম ছাড়ার হুমকি দিয়ে আসছিলেন ওই চেয়ারম্যান, গ্রাম না ছাড়ায় প্রথমে নিজের ক্যাডার বাহিনী দিয়ে ক্রিকেটের শক্ত কাঠের স্ট্যাম্প এবং পরবর্তীতে পুলিশের উপস্থিতিতেই চেয়ারম্যান নিজে লোহার পাইপ দিয়ে পিটিয়ে অসীমের উপর নির্মম নির্যাতন চালায়। শুধু তাই নয়, একই সময়ে ভুক্তভোগী পরিবারের আয়ের একমাত্র উৎস ছোট্ট চায়ের দোকানটিও ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয় চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম ও তার সহযোগীরা।
ঘটনার বিস্তারিত বিবরণে জানা যায়, নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী ও ক্ষমতাধর নেতা হওয়ায় এবং তার অসংখ্য ক্যাডার বাহিনী থাকায় ভীতবিহ্বল হয়ে চলতি মাসের ১৭ জুলাই সন্ধ্যা ৭টার দিকে বৈকালিন বাজারে উপস্থিত হয়ে নির্বাচনে তাকে ভোট না দেওয়ার জন্যে ক্ষমা চাইতে মো. নজরুল ইসলাম জোমাদ্দারের কাছে দেখা করতে যান অসীম চন্দ্র শীল। এসময় চেয়ারম্যানের ক্যাডার বাহিনীর সদস্য ফরিদ (৩৫), বাপ্পি (৪০), ফোরকান (২৬), ইমরান (১৭) এবং রাজু জোমাদ্দারসহ (৪০) আরো অনেক লোকজন মিলে অসীমকে ক্রিকেটের শক্ত স্ট্যাম্প দিয়ে পিটিয়ে মাথা ফাটিয়ে দেয়। এ ঘটনার পরপরই স্থানীয়রা পুলিশে খবর দিলে বামনা থানার এসআই সিদ্দিকুর রহমানকে নিয়ে ঘটনাস্থলে আসেন বামনা থানার ওসি মো. বশিরুল আলম।
পরে মাথায় রক্তাক্ত জখম নিয়ে অসীম চন্দ্র শীল আরএন ক্লিনিকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিতে গেলে সেখান থেকে তাকে ধরে এনে চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম জোমাদ্দার স্বয়ং নিজেই লোহার পাইপ দিয়ে ফের পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। এসময় এসআই সিদ্দিক ঘটনাস্থলে এবং ওসি বশিরুল আলম ঘটনাস্থল থেকে অল্প কিছু দূরে উপস্থিত ছিলেন। পুলিশের এসআই সিদ্দিকের সামনে নির্মম এ নির্যাতনের ঘটনা ঘটলেও অসীমকে রক্ষা করতে কোনো উদ্যোগই নেননি তিনি। একই সময়ে বৈকালিন বাজারে অসীম চন্দ্র শীলের দরিদ্র পিতার দৈনন্দিন উপর্জনের একমাত্র অবলম্বন চায়ের দোকানটিও ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয় নজরুল ইসলাম জোমাদ্দার ও তার ক্যাডার বাহিনী।
প্রভাবশালী ও ক্ষমতাধর রাজনৈতিক নেতা মো. নজরুল ইসলাম জোমাদ্দারের ভয়ে বামনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎিসা নিতে পারেননি অসীম। এখন পর্যন্ত থানায় মামলা করতেও সাহস করেননি তারা। প্রথমে মঠবাড়িয়া হাসপাতালে এবং পরে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নেন বলেও জানান অসীম চন্দ্র শীল।
নি এম/নিলয় চক্রবর্তী
Editor & Publisher : Sukriti Mondal.
E-mail: eibelanews2022@gmail.com