শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
শনিবার, ৬ই আশ্বিন ১৪৩১
সর্বশেষ
 
 
সাংবাদিক রোজিনার জামিন হয়নি, আদেশ রবিবার
প্রকাশ: ০৬:২২ pm ২১-০৫-২০২১ হালনাগাদ: ০৬:২২ pm ২১-০৫-২০২১
 
এইবেলা ডেস্ক
 
 
 
 


করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিনের সরকারি নথির ছবি তোলার অভিযোগে হওয়া মামলায় কাশিমপুর কারাগারে থাকা সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের জামিন শুনানি হলেও বৃহস্পতিবার জামিন হয়নি। এ বিষয়ে আগামী রবিবার আদেশ দিবেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (২০ মে) দুপুর পৌনে ১টার দিকে ঢাকা মহানগর হাকিম বাকী বিল্লার ভার্চুয়াল আদালতে তার জামিন শুনানি ‍হয়। নথি পর্যালোচনা করে আদেশ দেন বিচারক। শুনানিতে অংশ নেন আইনজীবী এহসানুল হক সমাজি ও প্রশান্ত কুমার কর্মকার।

রোজিনা ইসলামের আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী বলেছেন, মামলার এজাহার ত্রুটিপূর্ণ। আর অফিসিয়াল সিক্রেসি অ্যাক্ট অনুযায়ী এখানো কোন অপরাধ সংঘটিত হয় নাই। যেহেতু অপরাধ সংঘটিত হয় নাই সেহেতু আবেদনকারী জামিন পাওয়ার হকদার।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হেমায়েতউদ্দিন খান হিরন বলেন, এই সরকার সাংবাদিকবান্ধব। সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে নয়। এখানে একজন সাংবাদিক অপরাধে জড়িয়ে নিজেকে মুক্ত করতে মুচলেকা দিতে চেয়েছিলেন। আমরা সেই ভিডিও ফুটেজ কোর্টে দাখিলের জন্য সময় চাচ্ছি। তিনি আরও বলেন, যেহেতু জামিন অযোগ্য মামলা, জামিন দেওয়ার সুযোগ নাই।

গত সোমবার (১৭ মে) সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে প্রায় ছয় ঘণ্টা আটকে রাখে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। পরে তাকে শাহবাগ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। মঙ্গলবার (১৮ মে) সকাল পৌনে ৮টার দিকে শাহবাগ থানা থেকে তাকে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে নেওয়া হয়। সকাল সাড়ে ১০টার পর তাকে আদালতে তোলা হয়। এদিন পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আরিফুর রহমান সরদার। অপরদিকে তার আইনজীবী প্রশান্ত কুমার কর্মকর্তার তার জামিন চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক তার রিমান্ড আবেদন নামঞ্জুর করে জামিন শুনানির জন্য বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করেন।

প্রথম আলো পক্ষ থেকে জানানো হয়, রোজিনা ইসলাম পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য সোমবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যান। তাকে সেখানে একটি কক্ষে ৫ ঘণ্টা আটকে রাখা হয় এবং তার মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়া হয়। একপর্যায়ে সেখানে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর তার পরিবার তাকে হাসপাতালে নিতে চাইলেও তা দেয়নি পুলিশ। রাতে শাহবাগ থানায় অফিশিয়াল সিক্রেট আইনের (১৯২৩) ৩ ধারায় তার নামে মামলা হয়।

এদিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দাবি, করোনার ভ্যাকসিন ক্রয়, সংগ্রহ সংক্রান্ত গোপনীয় নথি নাড়াচাড়া ও শরীরে লুকিয়ে রেখেছিলেন। এ সব নথি জনগণের সামনে এলে অন্যান্য দেশের কাছে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হবে।

তবে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের দাবি, সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম দাবি করেছেন, সচিবের সঙ্গে দেখা করার জন্য তিনি পিএস সাইফুল ইসলামের রুমে অপেক্ষা করছিলাম, এসময় পিএস সাইফুল ইসলাম নথিপত্র গায়েবের অভিযোগ তুলে তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। একপর্যায়ে একজন পুলিশ কনস্টেবল ডেকে তার শরীরে হাত দেন। তাকে সাজানো অভিযোগে পিএস আটকে রাখে বলে দাবি করে তিনি বলেন, তিনি কোনো নথিপত্র নেননি। এমনকি মঙ্গলবার আদালত প্রাঙ্গণে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের রিপোর্ট করার জন্য তার সঙ্গে অন্যায় করা হচ্ছে।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মাইদুল ইসলাম প্রধান পরে রাত ৯টার দিকে সাংবাদিকদের জানান, সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম সচিবের পিএসের রুমে ঢুকে মোবাইলে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ফাইল-নথির ছবি তোলেন। আর কিছু কাগজপত্র তিনি সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছিলেন। একজন অতিরিক্ত সচিব, পুলিশের একজন সদস্য দেখে তাকে চ্যালেঞ্জ করে বলেন, এটা নিয়ে যেতে পারেন না। তখন পুলিশকে জানানোর পর মহিলা পুলিশ এসেছে। তাকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপ-সচিব সিব্বির আহমেদ শাহবাগ থানায় সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে সরকারি নথিপত্র সরানোর অভিযোগ দায়ের করেছেন।

অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট, ১৯২৩-এ আইনের ৩ ধারায় বলা হয়েছে, নিষিদ্ধ স্থানে যদি কেউ যায় বা যেতে উদ্যত হয় কিংবা ওই স্থানের কোনো নকশা বা স্কেচ তৈরি করে বা কোনো গোপন তথ্য সংগ্রহ বা প্রকাশ করে তবে সে অপরাধী হবে। ৩ (ক) ধারায় বলা হয়েছে যে, নিষিদ্ধ স্থানের কোনো ফটো, স্কেচ বা নক্সা কেউ প্রকাশ করতে পারবে না। ৪ ধারায় বলা হয়েছে যে, কোনো বিদেশি এজেন্টের সঙ্গে যোগাযোগ করে খবর সংগ্রহ করা যাবে না।

৫ ধারায় বলা হয়েছে যে, কোনো ব্যক্তি গোপনে কোনো সংবাদ পেয়ে থাকলে সেই সংবাদ প্রকাশ করতে পারবে না। কোনো সংবাদপত্র যদি কোনো গোপন সংবাদ প্রকাশ করে তবে প্রতিবেদক, সম্পাদক, মুদ্রাকর এবং প্রকাশক অপরাধী হবেন। এসব কাজে সহায়তা করা অপরাধ বলে গণ্য হবে। ৩৭৯/৪১১ এই ধারার অর্থ হলো,যদি কোন ব্যক্তি অন্যের অজান্তে কোন জিনিস চুরি করেন তবে ৩৭৯ ধারায় মামলা দেওয়া হয়,আর যদি উক্ত মালামাল সহ ঐ আসামিকে ধরা হয় বা গ্রেফতার করা হয় তবে ৪১১ ধারায় রিকভারি দেখানো হয় । এ ক্ষেত্রে আসামির সাজা হবেই বলে আইনে আছে।

নি এম/

 
 
 
   
  Print  
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
আরও খবর

 
 
 

 

Editor & Publisher : Sukriti Mondal.

E-mail: eibelanews2022@gmail.com

a concern of Eibela Ltd.

Request Mobile Site

Copyright © 2024 Eibela.Com
Developed by: coder71