রবিবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪
রবিবার, ২৪শে অগ্রহায়ণ ১৪৩১
সর্বশেষ
 
 
জেনে নিন মহাতীর্থ কালীঘাটের কিছু অজানা তথ্য
প্রকাশ: ০৪:৪২ pm ১৪-১০-২০২০ হালনাগাদ: ০৪:৪২ pm ১৪-১০-২০২০
 
এইবেলা ডেস্ক
 
 
 
 


হিন্দুশাস্ত্র মতে, দেবদেবীদের মধ্যে সবচেয়ে জাগ্রত হলেন মা কালী। যাঁর কাছ থেকে ভক্তরা কখনোই খালি হাতে ফেরেন না। তিনি সবারই মনস্কামনা পূর্ণ করেন। তাই, বিপদে আপদে মা কালীর কাছে ছুটে যান তাঁর অগণিত ভক্তবৃন্দ। লোকমুখে প্রচলিত রয়েছে, কলকাতার কালীঘাটের মা কালী অত্যন্ত জাগ্রত। এই মন্দিরের দশনার্থীরা কখনোই খালি হাতে ফেরত যায় না। কালীঘাট সতীর একান্ন শক্তিপীঠের অন্যতম হিন্দু তীর্থক্ষেত্র। 

পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে, সতীর দেহত্যাগের পর তাঁর ডান পায়ের চারটি (মতান্তরে একটি) আঙুল এই তীর্থে পতিত হয়েছিল। কলকাতা মহানগরীর অন্যতম দর্শনীয় স্থান এই কালীঘাটের মন্দির। তাহলে আসুন জেনে নেওয়া যাক মহাতীর্থ কালীঘাট সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য- 

সত্যযুগে প্রজাপতি দক্ষ তাঁর নিজ গৃহে এক মহাযজ্ঞের আয়োজন করেছিলেন। সেই যজ্ঞে দেবতা, মুনি-ঋষিসহ অন্যান্য সকলে নিমন্ত্রিত থাকলেও, দক্ষ তাঁর আপন কন্যা সতী ও জামাতা শিব-কে নিমন্ত্রণ করেননি। সতী মহাযজ্ঞের কথা জানতে পেরে বিনা আমন্ত্রণেই যজ্ঞস্থলে উপস্থিত হন। কিন্তু সেখানে তাঁর সম্মুখেই প্রজাপতি দক্ষ মহাদেবের নিন্দা করা শুরু করেন। পতিনিন্দা সহ্য করতে না পেরে শিব পত্নী সতী তৎক্ষণাৎ যজ্ঞকুণ্ডে আত্মবিসর্জন দেন। তখন মহাদেব ক্রুদ্ধ হয়ে সতীর শবদেহ তাঁর নিজ স্কন্ধে নিয়ে বিশ্বধ্বংস করার উদ্দেশ্যে তাণ্ডবনৃত্য শুরু করেন। শিব-কে শান্ত করতে ভগবান বিষ্ণু আপন সুদর্শন চক্র দিয়ে সতীর দেহ খণ্ডবিখণ্ড করে দেন। সতীর খণ্ডবিখণ্ড দেহের টুকরোগুলি পৃথিবীর নানা স্থানে পতিত হয়েছিল এবং পৃথিবীতে পড়ামাত্রই এগুলি প্রস্তরখণ্ডে পরিণত হয়। পীঠমালা তন্ত্র অনুযায়ী, সতীর ডান পায়ের চারটি (মতান্তরে একটি) আঙুল পড়েছিল কালীঘাটে। 

কালীঘাট মন্দির সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য ১) কালীঘাটের বর্তমান মন্দিরটি ২০০ বছরেরও বেশি পুরোনো। হাটখোলার দত্ত পরিবারের কালীপ্রসাদ দত্ত এবং বড়িশার সাবর্ণ রায়চোধুরী পরিবারের সন্তোষ রায়চৌধুরী এই মন্দির নির্মাণ করেছিলেন। মায়ের মূর্তির বর্তমান রূপটি ব্রহ্মানন্দ গিরি ও আত্মারাম গিরি নামের দুই সন্ন্যাসী দান করেন। 

২) কালীঘাটের কালীর ভৈরব হলেন নকুলেশ্বর মহাদেব। কালীঘাট মন্দিরের নিকটেই পীঠরক্ষক দেবতা নকুলেশ্বর শিবের মন্দির। 

৩) কালীঘাট মন্দিরের সংলগ্ন একটি পুকুর রয়েছে। কথিত আছে যে, এই পুকুর থেকেই নাকি সতীঅঙ্গ পাওয়া গিয়েছিল। পুকুরটির নাম ‘কু‌ণ্ড পুকুর' এবং এর জল গঙ্গাজলের তুল্য পবিত্র বলে মনে করা হয়। 

৪) ইংরেজ আমলে, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শ্বেতাঙ্গ কর্মচারীরা নাকি নিয়মিত এই মন্দিরে আসতেন এবং একপ্রকার বিশ্বাস থেকে পুজোও দিতেন। 

কালীঘাটের কালী মায়ের মূর্তি কালীঘাট কালী মন্দিরের কষ্টিপাথরের কালীমূর্তিটি অভিনব রীতিতে নির্মিত। মূর্তিটির জিভ, দাঁত, মুকুট, হাত ও মুণ্ডমালাটি সোনার। মন্দিরের মধ্যে একটি সিন্দুকে সতীর প্রস্তরীভূত অঙ্গটি রক্ষিত আছে; এটি কারুর সম্মুখে বের করা হয় না। প্রতি বছর পয়লা বৈশাখ, দুর্গাপূজা ও দীপান্বিতা কালীপূজার দিন এই মন্দিরে প্রচুর ভক্তের সমাগম ঘটে। শিবরাত্রি ও নীলষষ্ঠী উপলক্ষেও এই মন্দিরে প্রচুর ভক্ত সমাগম হয়। এছাড়াও, বছরের প্রায় সবসময়ই এখানে ভক্তদের ভীড় লক্ষ্য করা যায়।

নি এম/

 
 
 
   
  Print  
 
 
 
 
 
 
 
 
আরও খবর

 
 
 

 

Editor & Publisher : Sukriti Mondal.

E-mail: eibelanews2022@gmail.com

a concern of Eibela Ltd.

Request Mobile Site

Copyright © 2024 Eibela.Com
Developed by: coder71