শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪
শুক্রবার, ১৫ই চৈত্র ১৪৩০
সর্বশেষ
 
 
জলঢাকায় হিন্দু বিধবাকে ধর্মান্তরের চেষ্টায় জোরপূর্বক ধর্ষণ  
প্রকাশ: ১০:৩৬ pm ৩১-০৭-২০২০ হালনাগাদ: ১০:৩৬ pm ৩১-০৭-২০২০
 
নীলফামারী প্রতিনিধি
 
 
 
 


ধর্মীয় পরিচয় গোপন রেখে এক যুবকের প্রেমের প্রস্তাবে রাজি হয় না এক বিধবা হিন্দু নারী। এরপর কবিরাজের বাড়িতে নেয়ার অজুহাতে কৌশলে ওই বিধবাকে নিজের জিম্মায় নিয়ে যায় যুবক। এবার ধর্মান্তরিত হয়ে বিয়ের জন্য চাপাচাপি করে সে। তাতেও রাজি না হওয়ায় লাগাতার ধর্ষণ করা হয় নারীকে। সম্প্রতি এমনই ঘটনা ঘটেছে নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলায়।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বিগত চার বছর পূর্বে দুই সন্তান রেখে অসুখজনিত কারণে মারা যায় নারীটির স্বামী সুবাস চন্দ্র রায়। সন্তানদের তার শশুর নিজের কাছে রেখে দিয়ে বিধবা নারীকে নিজ বাপের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। বিধবা নারীটি ভাইয়ের কাছে আশ্রয় গ্রহণ করে। অল্প বয়সে বিধবা এই নারী বাপের বাড়িতে বেকার অবস্থান করায় জীবিকা নির্বাহের জন্য তার পাশে দাঁড়ান স্থানীয় চেয়ারম্যান। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে রাস্তার মাটিকাটার কাজে নিয়োগ পান বিধবা।

নিয়োগ পেয়ে অন্যান্য মহিলার মতো এই নারীকেও ইজিবাইক বা অটোর মাধ্যমে ইউনিয়নের বিভিন্ন জায়গায় যেতে হয় রাস্তার মাটিকাটা কাজে। অটোতে প্রতিনিয়ত যাওয়া-আসার সুবাদে এক মাস আগেই পরিচয় হয় একই উপজেলার কিসমতপুর হাজীপাড়ার মোঃ রহিম নামের যুবকের সাথে। তবে রহিম নিজের ধর্মীয় পরিচয় ও ঠিকানা গোপন রেখে নিজেকে হিন্দু বলে পরিচয় দেয় এবং তার নাম বলে শ্যামল।

প্রতিনিয়ত নিজের অটোতে যাওয়া-আসা করার ফাঁকে ওই বিধবাকে প্রেমের প্রস্তাব দেয় যুবক। কিন্তু সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে তা বরাবরই প্রত্যাখ্যান করেন ওই নারী।

২২ জুলাই বিধবা নারীকে শ্যামল (রহিম) জানান, তার সন্তানদের শশুর বাড়ি থেকে ফিরিয়ে আনা যাবে এক উপায়ে। এজন্য তাকে এক কবিরাজের বাড়িতে যেতে হবে। এই মর্মে সে নারীও কবিরাজের বাড়িতে যেতে রাজী হয়। সেদিন কবিরাজের বাড়িতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়ে যুবকটি কবিরাজের বাড়িতে না নিয়ে কিসমতপুর হাজীপাড়ায় তার বাড়িতে নিয়ে যায়। তার বাবা মোঃ আমিনুর রহমান ও মা মোছাঃ রহিমা বেগমের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়।

বিধবা নারীটি তখনই জানতে পারেন, শ্যামল হিন্দু নয়, মুসলিম, তার নাম মোঃ রহিম। মহিলা জানতে চান, কবিরাজের বাড়িতে না গিয়ে কেন তার বাড়িতে নিয়ে এসেছে সে? তখন রহিম জানান, তার বাবা মাও কবিরাজের বাড়িতে যাবেন। পরদিন যুবকটি ও তার বাবা-মা ওই বিধবা মহিলাকে কবিরাজের বাড়িতে না নিয়ে রহিমের নানার বাড়িতে যায়। সেখানে তাকে নিজের বৌ বলে পরিচয় দেয় রহিম। হিন্দু মহিলাটি এর প্রতিবাদ করলে তাকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে তাকে ধর্মান্তিত হয়ে বিয়ে করার জন্য চাপ দেয়। কিছুতেই সম্মত না হওয়ায় দুই দিন ধরে ওই মহিলাকে নানার বাড়িতে আটকে রেখে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক একাধিকবার ধর্ষণ করে রহিম।

বিয়ে করতে রাজী না হওয়ায় বিধবা নারীটিকে রহিম  ঢাকা নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করে। এরইমধ্যে কৌশলে বিধবা মহিলাটি তার ভাই করুণাকান্তকে মোবাইলে অবগত করে পুরো ঘটনা। করুণাকান্ত তার দুলাভাই ও বাংলাদেশ মাইনরিটি ওয়াচ নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি দিলীপ কুমার রায়ের সহযোগিতা নেন। তারা দ্রুত নীলফামারীর বুড়িরহাট গিয়ে ওই নারীকে উদ্ধার করেন।

২৬ জুলাই এ বিষয়ে মোঃ রহিম ও তার বাবার বিরুদ্ধে জলঢাকা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করেন ওই বিধবা নারী। এ বিষয়ে জলঢাকা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, মামলা হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে আদালতের মাধ্যমে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

নি এম/

 
 
 
   
  Print  
 
 
 
 
 
 
 
 
আরও খবর

 
 
 

 

Editor & Publisher : Sukriti Mondal.

E-mail: eibelanews2022@gmail.com

a concern of Eibela Ltd.

Request Mobile Site

Copyright © 2024 Eibela.Com
Developed by: coder71