চন্দন কুমার আচার্য, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জের জেলায় গত কয়েক দিনের প্রচণ্ড গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন সাধারণ মানুষ। তীব্র তাপদাহে সাধারণ মানুষকে বাধ্য হয়েই ঘরবন্দি হয়ে থাকতে হচ্ছে। এতে করে বিপর্যন্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। কিন্তু দখিনা হাওয়ার কারণে মানুষ একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারছে।
গরমে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ। এছাড়া পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতাল ও ক্লিনিক গুলোতে বাড়ছে রোগীর সংখ্যা।
বৃহস্পতিবার, শুক্রবার ও শনিবার জেলার বিভিন্ন স্থানে ঘুরে দেখা যায়, প্রচণ্ড গরমের কারণে বিভিন্ন হাট-বাজার, মোড়গুলোতে তরমুজ, ডাব ও আখের রসের দোকান বসেছে। এসব দোকানে ভিড়ও বেশ।
তাছাড়া গ্রামগুলোতে গরমে অতিষ্ঠ হয়ে কিশোররা পুকুরে নেমে দীর্ঘক্ষন ডুব-সাঁতারসহ গোসল করছে। অনেককেই দেখা গেলো, গরম থেকে বাঁচতে ছাতা মাথায় দিয়ে চলাচল করতে। জেলার হাট-বাজার এলাকায় ভ্রাম্যমাণ তরমুজ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে জানা যায়, গত কয়েক দিন থেকে প্রচণ্ড গরমের কারণে তরমুজের খুব ভালো বিক্রি হচ্ছে। বর্তমানে প্রতিটি তরমুজ ৭০ থেকে ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। জেলার ও বেলকুচি উপজেলা এলাকার চালা-মুকুন্দগাঁতী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় চত্বরে ও সয়দাবাদ বৈশাখী মেলায় শরবত ব্যবসায়ী কাজীপুর উপজেলা থেকে আগত বাবুল হোসেন ও আক্তারুজ্জামানর জানান, এই তাপে একটু স্বস্তি পেতে মানুষ শরবত পান করছেন। প্রতি গ্লাসের মূল্য নিচ্ছেন ১০ টাকা। গত কয়েকদিন থেকে প্রতিদিন ২০০ থেকে ২৫০ গ্লাস শরবত বিক্রি করছেন। আগে তিনি প্রতিদিন বিক্রি করতেন ৭০ থেকে ৮০ গ্লাস শরবত।
জেলার বিভিন্ন এলাকায় আরও দেখা যায়, প্রচন্ড রোদের সময় ঢাকা থেকে গাড়ীর মাল লোড আনলোড করতে হিমশিম খাচ্ছে খেটে খাওয়া মানুষ। তাদের অবস্থা দেখে মনে হয় তাদের জীবন প্রায় ওষ্ঠাগত। জীবন বের হয়েই যাচ্ছে, তবুও উপায় নেই সংসার পরিচালনায় তাদের এ জীবনকে রোদের সঙ্গে মিশিয়ে দিয়েছে।
অপর দিকে গ্রামের মানুষ গুলোর অবস্থা আরও ভয়াবহ, এক দিকে বিদ্যুৎ এর লোড শেডিং অপর দিকে অধিক তাপমাত্রায় টিনের ঘরে যেন থাকাই দায়। নিরূপায় হয়ে তারা গাছের তলে বসে সময় কাটাচ্ছে। বেশি অসুবিধায় পড়েছে শিশুদেরকে নিয়ে। প্রচন্ড গরমে শিশুদের জন্য জেলার বিভিন্ন উপজেলার মার্কেট গুলোতে বিক্রি হচ্ছে অটো ফ্যান। অনেক পিতা মাতাই অটো ফ্যান ক্রয় করে নিচ্ছেন।
জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসারদের কাছ থেকে জানা যায়, প্রচণ্ড এই তাপদাহে বেশি বেশি করে পানি পান করতে হবে। রোদের মধ্যে বেশিক্ষণ চলাচল করা যাবে না। শিশুদের খুবই যতেœ রাখতে হবে যাতে গরমের ঘাম তাদের শরীরে বসে না যায়। এছাড়া শারীরিক অসুবিধা মনে হলেই দ্রুত হাসপাতালে এসে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে বলে তারা জানিয়েছেন।
এইবেলা ডটকম
Editor & Publisher : Sukriti Mondal.
E-mail: eibelanews2022@gmail.com