২১ দিনের লকডাউনে যথেষ্ট সাড়া মিলেছে। করোনা সংক্রমণের সর্বভারতীয় গড় সময় দ্বিগুণের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।
সরকারি হিসাবে লকডাউনের সর্বভারতীয় গড় সুফল পাওয়া যাচ্ছে। সংক্রমণের সময় বেড়ে গেছে। একটা সময় যেখানে দুই-আড়াই দিনে রোগীর সংখ্যা দ্বিগুণ হচ্ছিল, এখন তা প্রায় সাত দিন সময় নিচ্ছে। রোগমুক্তির সংখ্যাও বাড়ছে। দেশের রাজ্যগুলোর মধ্যে এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে সফল রাজ্য কেরালা। নতুন সংক্রমণ সেখানে এখন প্রায় নেই বললেই চলে। সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, দক্ষিণ ভারতের এই রাজ্যে সংক্রমণের সংখ্যা দ্বিগুণ হতে সময় নিচ্ছে ৫০ দিন। এই রোগ প্রতিরোধে তাদের মডেল এখন সবচেয়ে বেশি আলোচিত।
পশ্চিমবঙ্গে অবশ্য সংক্রমণ দ্বিগুণ হতে সময় নিচ্ছে আরও বেশি। ৭০ দিন। কিন্তু এই রাজ্য নিয়ে প্রশ্নের শেষ নেই। রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তথ্য চাপা দেওয়ার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। করোনায় মৃত্যুর সার্টিফিকেট না দিতে চিকিৎসকদের ওপর চাপ সৃষ্টির অভিযোগও উঠেছে। এই কারণে ঘনবসতিপূর্ণ এই রাজ্যে করোনার মোকাবিলা প্রশ্নাতীত নয়।
মহারাষ্ট্র, গুজরাট, কর্ণাটক, দিল্লি নিয়ে সরকারের চিন্তা কয়েক দিন আগেও ছিল প্রবল। এর মধ্যে দিল্লিতে উল্লেখযোগ্য ফল পাওয়া গেছে। কিছুদিন আগেও সংক্রমণের সংখ্যা এই রাজ্যে দ্বিগুণ হচ্ছিল দেড়-দুই দিনে। সেটা বেড়ে হয়েছে ২৩ দিন। এই রাজধানী-রাজ্যে ৩৩টি অঞ্চল সম্পূর্ণভাবে সিল করে দেওয়া হয়েছে এবং যত বেশি সম্ভব পরীক্ষা করা হচ্ছে। গুজরাটে আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুণ হচ্ছিল আড়াই দিনে। তা এই মুহূর্তে সাড়ে চার দিন হয়েছে। এই রাজ্য নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার এখনো উদ্বিগ্ন। দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রোগী ধরা পড়েছে মহারাষ্ট্রে। মৃত্যুও সবচেয়ে বেশি এই রাজ্যে। কয়েক দিন ধরে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও এখনো গোটা রাজ্যই ‘রেড জোন’। চিন্তা বেশি এশিয়ার সবচেয়ে বড় বস্তি ধারাবিকে নিয়ে। এই রাজ্যে সংক্রমণ পরীক্ষার হারও সবচেয়ে বেশি। আপাতত এই রাজ্যে সংক্রমণ দ্বিগুণ হচ্ছে সাড়ে ছয় দিনে। সরকারের দুশ্চিন্তা আর যে রাজ্যগুলো নিয়ে, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে বিহার, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান ও উত্তর প্রদেশ।
সরকারের এই মুহূর্তের চিন্তা পবিত্র রমজান মাস নিয়ে। দিনভর উপবাস সন্ধ্যায় ইফতারের প্রার্থনার পর ভঙ্গ হয়। এই সময় থেকে মুসলমান-অধ্যুষিত অঞ্চলে দোকানপাট খোলা হয়। বেচাকেনা চলে মাঝরাত পর্যন্ত। এই সময়টায় সম্ভাব্য সংক্রমণ কী করে ঠেকানো যায়, রাজ্যে রাজ্যে চলছে সেই চিন্তা।
এক মাস ধরে দেশের অধিকাংশ মসজিদ বন্ধ। ইমামরা বাড়িতেই নামাজ পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন। পবিত্র রমজান মাস ভালোভাবে উতরানোর জন্য ইমামদের শরণাপন্ন হচ্ছে বিভিন্ন রাজ্য সরকার। কেন্দ্রীয় সরকারও সচেষ্ট। ইন্ডিয়ান মাইনরিটিস ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট এজেন্সির সভাপতি এম জে খান বলেছেন, মুসলিম সমাজের বিদগ্ধ মানুষজন ও বিভিন্ন মসজিদের ইমামরা পবিত্র রমজান মাস উদ্যাপনে যেসব সাবধানতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন, ৩ মে পর্যন্ত সেগুলো অবশ্যই মেনে চলা উচিত।
নি এম/