উচ্চ আদালতের সাবেক বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীকে চেয়ারম্যান করে ডেসটিনি ২০০০ লিমিটেডের পরিচালনা বোর্ড পুনর্গঠন করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে এই বোর্ডকে কম্পানিটির বার্ষিক সাধারণসভা করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
কম্পানিটির ১৬ অংশীদারের আবেদনে আজ বৃহস্পতিবার বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের একক কম্পানি বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মইনুল ইসলাম।
কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, ‘মামলাসহ নানা কারণে ২০১২ সালের পর আর কম্পানিটির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) হয়নি। কম্পানি আইন, ১৯৯৪-এর ৮১ ও ৮৫ ধারা অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে একবার এজিএম না হলে আদালতের অনুমতি নিয়ে এজিএম করতে হয়। যে কারণে ডেসটিনি ২০০০ লিমিটেডের ১৬ অংশীদার গত ৩১ মে হাইকোর্টে আবেদন করেন। সে অবেদনের শুনানি নিয়ে আদলত বোর্ড পুনর্গঠন করার পাশাপাশি এজিএম করার অনুমতি দিয়েছেন। ’
আগের বোর্ডের ৯ জনকে রেখে ১৭ সদস্যের বোর্ড পুনর্গঠন করা হয়েছে বলে জানান এই আইনজীবী। চেয়ারম্যান বাদে বোর্ডে নতুন তিন সদস্য হলেন সাবেক জেলা জজ হাসান শহীদ ফেরদৌস, আইনজীবী মারগুব কবির, ফখরুদ্দিন আহমেদ এফসিএ ও ব্যবসায়ী ইকবাল জামান। আর কম্পানিটির অংশীদারদের যারা আসামি না তাদের মধ্য থেকে কয়েকজনকে বোর্ডে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী উজ্জ্বল কুমার ভৌমিক। গ্রাহকের অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের দায়ে ডেসটিনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আমীনের আইনজীবী তিনি।
বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠানে বিলম্ব মার্জনা ও বার্ষিক সাধারণ সভা করার অনুমতি চেয়ে ২০১৮ সালে আবেদন করেন কম্পানিটির পরিচালক, সাবেক সেনাপ্রধান হারুন-অর-রশীদ ও কম্পানির পাঁচ অংশীদার। সে আবেদনের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট ওই বছরের ১৫ মে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন। গ্রাহকদের প্রতারিত করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগের মুখে থাকা ডেসটিনি ২০০০ লিমিটেড অবলুপ্ত বা অবসায়ন করতে নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, নোটিশে তা জানতে চান আদালত।
বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) করতে বিলম্ব মার্জনা চেয়ে করা আবেদনটি কেন অবলুপ্ত বা অবসায়নের আবেদন হিসেবে বিবেচনা করা হবে না এবং ডেসটিনি ২০০০ লিমিটেডকে অবলুপ্ত বা অবসায়ন করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয়। রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মস এবং ডেসটিনি ২০০০ লিমিটেডকে এর জবাব দিতে বলা হয়। পরে হাইকোর্টের এ আদেশে আপিল বিভাগ স্থগিতাদেশ দেন।
২০০০ সালের ১৪ ডিসেম্বর নিবন্ধন পাওয়া ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেডের মোট অংশীদার ৪৯ জন।
দুর্নীতির মামলায় জর্জরিত ডেসটিনি ২০০০ লিমিটেড ২০১২ সাল থেকে কার্যত বন্ধ। ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির প্রায় এক হাজার ৮৬১ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে মামলা করেছিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলায় অভিযুক্ত ৪৬ আসামির সবাই দোষী উল্লেখ করে গত ১২ মে রায় দেন ঢাকার চতুর্থ বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ নাজমুল আলম।
রায়ে ডেসটিনি গ্রুপের প্রেসিডেন্ট সাবেক সেনাপ্রধান হারুন-অর-রশিদ এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আমীনসহ ৪৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড এবং তাদের দুই হাজার ৩০০ কোটি টাকা জরিমানা করেন বিচারিক আদালত।
Editor & Publisher : Sukriti Mondal.
E-mail: eibelanews2022@gmail.com