অবিরাম বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে আবারও বন্যা দেখা দিয়েছে। উপজেলার কাটাখালী পয়েন্টে করতোয়া নদীর পানি গত ২৪ ঘন্টায় ১৫ সেঃ মিঃ বৃদ্ধি পেয়ে বিপদ সীমার ১০৩ সেঃ মিঃ উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
গত বুধবার (৩০ সেপ্টেম্বর) পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা নিয়ন্ত্রণ কক্ষ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
জানা গেছে, উপজেলার গোবিন্দগঞ্জের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া করতোয়া নদীতে আকষ্মিক পানি বৃদ্ধির ফলে বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। উপজেলার ফুলবাড়ি, দরবস্ত, তালুক কানপুর, হরিরামপুর, সাপমারা, নাকাইসহ ১০টি ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা পানিতে প্লাবিত হয়েছে। গত সোমবার হতেই করতোয়া এবং করতোয়া শাখা বাঙ্গালী নদীর পানি টই-টুম্বর হয়ে বিস্তীর্ণ এলাকার ফসলী জমি তলিয়ে গেছে সেই সাথে সহস্রাধিক বসত বাড়ীতে পানি উঠে চরম বিপাকে পড়েছে উপজেলার বানভাসী মানুষগুলো।
উপজেলার মহিমাগঞ্জ ইউনিয়নের বালুয়া এবং বোঁচাদহ এলাকায় এ বছরের পূর্ব দফা বন্যার পানির তোড়ে ভাঙ্গাবাঁধের অংশ দিয়ে নতুন করে বন্যার পানি ঢুকে মহিমাগঞ্জ, শালমারা রাখালবুরুজ এবং শিবপুর ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার রোপা আমন ও আখ সহ অন্যান্য ফসলী জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। নদীতীরবর্তী লোকজন দফায় দফায় বন্যার কবলে পড়ায় অনেক পরিবার নি:স্ব অবস্থায় মানবেতর ও দুর্বিসহ জীবনযাপন করছে।
এছাড়া উপজেলার পৌর শহরের একাংশেও বন্যার পানি ঢুকে পরায় শহরের ২নং ওয়ার্ডের চাষকপাড়া,খলসীচাঁদপুরসহ ৩, ৪ ও ৫ নং ওয়ার্ডের একাংশের ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে।পানি ছুটছে রেজিস্ট্রার অফিস এলাকা ও শহরের ঝিলপাড়া এলাকায়। বন্যায় আক্রান্ত পৌরবাসীর অভিযোগ পৌর শহরের ২নং ওয়ার্ডের খলসীচাঁদপুর এলাকার গোবিন্দগঞ্জ শহররক্ষা বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধটি পূর্বে বালু ব্যবসায়ী কর্তৃক কেটে ফেলায় বাঁধের একটি পয়েন্ট ও ভেঙ্গে যাওয়া অন্য আরেকটি পয়েন্ট মেরামত না করায় পানি বৃদ্ধির সাথে সাথেই শহর ডুবতে শুরু করেছে।
এছাড়াও শহরের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এলাকাসহ পরিসংখ্যান অফিস কক্ষেও বন্যার পানি প্রবেশ করায় চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছে। মাছ বাজারটি পানিতে নিমজ্জিত হওয়ায় মাছ ব্যবসায়ীরা পরেছেন বিপাকে। এছাড়াও ঢাকা-দিনাজপুর আঞ্চলিক মহাসড়কটির পশ্চিম চৌরাস্তা ও কাইয়াগঞ্জ নামকস্থানটি পানিতে তলিয়ে গেছে।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থদের সহায়তার জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জরুরি ভিত্তিতে দুটি অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে এবং আরও তিনটি আশ্রয়কেন্দ্র চালুর প্রক্রিয়াসহ অতিরিক্ত আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এর মধ্যে গোবিন্দগঞ্জ পৌর শহরের গোলাপবাগ সিনিয়র আলীয়া মাদ্রাসা ও গোবিন্দগঞ্জ মহিলা কলেজের অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্রে শতাধিক পরিবার আশ্রয় নিয়েছে।
জেলা প্রশাসক আব্দুল মতিন কর্তৃক বন্যা দূর্গত এলাকা পরিদর্শন করে বানভাসিদের জন্য দশটন ত্রান বরাদ্দ দিয়েছেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার রামকৃষ্ণ বর্মন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
নি এম/বিজয়
Editor & Publisher : Sukriti Mondal.
E-mail: eibelanews2022@gmail.com