শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪
শুক্রবার, ১৫ই চৈত্র ১৪৩০
সর্বশেষ
 
 
করোনা নিয়ে চীনের ভূমিকা সন্দেহজনক !
প্রকাশ: ০৫:৪৯ pm ৩০-০৩-২০২০ হালনাগাদ: ০৭:৪১ pm ৩১-০৩-২০২০
 
এইবেলা ডেস্ক
 
 
 
 


https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=119931116306576&id=100522708247417

সার্স-এর পর করোনা। ফের আতস কাঁচের নীচে চীনা ষড়যন্ত্র। গোটা দুনিয়ার সামনে সবচেয়ে বড় বিপর্যয়, নোভেল করোনা মহামারি নিয়ে প্রশ্ন কিন্তু সাধারণ মানুষের মধ্যে গেঁথে গিয়েছে। অনেকেই বিশ্বাস করতে শুরু করেছেন, এর পিছনে রয়েছে চীনা-কারসাজি। ইজরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের বক্তব্যকে আরও বেশি বিশ্বাসযোগ্য করে তুলেছে চীন নিজেই। দুনিয়ার এই সঙ্কটের মুহূর্তে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রকের মুখপাত্র ঝাঁও লিজিয়া দুনিয়ার নজর ঘোরাতে অভিযোগ করেছেন আমেরিকার বিরুদ্ধে। তাঁর ট্যুইট, মার্কিন সেনারাই নাকি চীনের হুবেই রাজ্যের ইউহানে গিয়ে ছড়িয়ে এসেছে কভিড ১৯। কারণ এর ঠিক আগেই ওয়াশিংটন পোস্ট তির ছুঁড়েছিল চীনের লালফৌজের বিরুদ্ধে। সবমিলিয়ে করোনার গায়েও ‘ম্যান মেড’-এর তকমা লাগানোর চেষ্টা চলছে। আর এই চেষ্টাটা মোটেই কল্পবিলাস নয়। সার্স (সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরিটারি সিন্ড্রোম) পরবর্তীতে করোনার আবির্ভাবকে নিয়ে অমূলক নয় এই আশঙ্কা। 

https://www.facebook.com/536762343051829/posts/3133252806736090/

রেসিডেন্ট ইভিল সিনেমার কথা মনে আছে? এই শতাব্দির গোড়ায় কল্পিত টি-ভাইরাস নিয়ে হরোর কাহিনী। ৬ সিরিজের এই সিনেমায় জৈব রাসয়নিক বোমার ভয়ানক পরিণতি দেখানো হয়েছিল। সেই টি-ভাইরাস রূপোলি পর্দায় যেমন ত্রাসের সৃষ্টি করেছিল, ঠেক তেমনি কভিড১৯ গোটা দুনিয়াকে সর্বনাশের দোরগোরায় দাঁড় করিয়েছে। এই সর্বনাশের শুরু চীন থেকে। চীন অবশ্য এখন নিশ্চিন্তে। করোনামুক্ত। উল্টে অন্য দেশকে সাহায্য করছে। সেইসঙ্গে কাঁচের ঘরে বাস করেই ঢিল ছুঁড়ছে অন্যের দেওয়ালে। চেনা ছক চীনের। অনেকটা ঠাকুর ঘরেকে, আমি কলা খাইনির গল্পের মতোই মনে হচ্ছে চাইনিজ কেরামতি। ইজরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ নিশ্চিত, ইউহানে চিনা গবেষণাগার থেকেই লিক হয়েছে কভিড১৯। চীনা প্রতিরক্ষা বাহিনীর গোপন গবেষণাগার থেকেই নাকি বার হয়েছে এই ভাইরাস। মোসাদের বক্তব্য অনুযায়ী, সেখানে জৈব রায়সয়নিক বোমা তৈরির গবে,ণা চালাচ্ছিল লাল ফৌজ। আমেরিকাকে টক্কর দিয়ে দুনিয়া জুড়ে নিজেদের প্রতিপত্তি জাহির করতেই পারমাণবিক শক্তির থেকেও ভয়ঙ্কর জৈব রাসয়ণিক অস্ত্র তৈরিতে ব্যস্ত কমিউনিস্ট দেশটি। দুনিয়ায় আধিপত্ত বিস্তারের লক্ষ্যে কমিউনিস্ট পার্টির নির্দেশেই নাকি তৈরি হচ্ছিল এই বোমা। কিন্তু স্যাবোতেজ বা অন্য কোনও কারনে বোতল থেকে দৈত্য বার হয়ে এসে চীনা জনগণকেই গ্রাম করতে বসেছে। তবে সৃষ্টিকর্তা যেহেতু চীনারাই তাই সামাল দিতেও তাঁরা সক্ষম হয় দ্রুত।

https://www.facebook.com/IndiaToday/videos/502086610486443/

মোসাদের এই বক্তব্যের সঙ্গে অনেকটাই একমত মার্কিন মিডিয়া। ওয়াশি্ংটন পোস্ট সেকথা ফলাও করে প্রকাশও করেছে। চীন অবশ্য সেই যুক্তি উড়িয়ে দিয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, মার্কিন সেনা জওয়ানরাই ইউহানে ছড়িয়েছে এই ভাইরাস। আমেরিকা নাকি চীনকে শায়েস্তা করতেই এই খেলায় মেতে ওঠে। চীনা বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র নিজেই এই বক্তব্য ট্যুইট করেছেন। প্রশ্ন তুলেছেন, চীনে যখন করোনা থাবা বিস্তার করে, তখন আমেরিকা কী করে নিরাপদ থাকে? ছেঁদো যুক্তি। দুনিয়ার নজর ঘোরাতেই এমন বক্তব্য চীনের। এমবটাই মনে করে কূটনৈতিকমহল। 

করোনা নিয়ে চীন ও আমেরিকার এই চাপানউতোরের মধ্যে একটি প্রশ্ন কিন্তু চাপা পড়ে যাচ্ছে। সেটা চীনের করোনা নিয়ে চরম দায়িত্তজ্ঞানহীনতা। চীনে করোনা মহামারির চেষ্টা করলেও প্রথম দিকে বেমালুম চেপে যায় সেই খবর। পরবর্তীতেও সঠিক খবর জানতে পারেনি গোটা দুনিয়া। ফলে প্রস্তুতি নিতে অনেক দেরি হয়ে যায়। ততক্ষণে গোটা দুনিয়ায় ছড়িয়ে পরে সর্বনাশা ভাইরাস। হাজার হাজার মানুষ মারা যান। আরও বহু মানুষ এখনও মৃত্যুপথ যাত্রী। কিন্তু চীন একটু সজাগ থাকলেই এই মৃত্যু মিছিল অনেকটাই রোখা যেত। ভাইরাসকে বন্দি করে রাখা যেত সামান্য কিছু এলাকার মধ্যে। তাই চীন এই দায় কিছুতেই এড়াতে পারেনা। 
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঠিকই বলেছেন। বিশ্বযুদ্ধের থেকেও ভয়ানক পরিস্থিতি গোটা দুনিয়ার সামনে। অথচ এই সঙ্কট এড়ানো যেতো। চীনের কারণেই গোটা দুনিয়াকে আজ এই পরিস্থিতির সামনে পড়তে হয়েছে। বিষয়টি যদি ম্যান মেড নাও হয়, তবু চীন তাঁর দায়িত্ত এড়াতে পারেনা।

এখন প্রশ্ন উঠতেই পারে, চীন কেন এটা করতে গেলো? সময়টা খেয়াল করলেই বিষয়টি পরিষ্কার হবে। দুনিয়ার সুপার পাওয়ার হিসাবে উঠে আসতে মরিয়া বেজিং। আমেরিকাকে চ্যালেঞ্জ জানাতে তাঁরা হাতে নিয়েছে ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড বা এক অঞ্চল এক সড়ক প্রকল্প। সংক্ষেপে ওবর। চীন সড়ক, রেল ও নৌপথে সুদূর ইওরোপের সঙ্গে যোগাযোগ ও পরিকাঠামো ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন আনতে হাতে নেয় এই প্রকল্প। অন্নত ৬০টি দেশের সঙ্গে যুক্ত হবে কমিউনিস্ট শাসিত দেশটি। নিজেদের আর্থনীতির পাশাপাশি রাষ্ট্রনীতিও বিস্তার করতে চায় এশিয়া থেকে ইওরোপ। সঙ্গে আফ্রিকান দেশগুলিতেও। ২০১৩ সালেই চীন এই প্রকল্পটি হাতে নেয়।  চীনা রাষ্ট্রপ্রধান শি জিং পিং ২০১৯ সালে এই প্রকল্পে সঙ্গে পায় ইরান ও ইতালিকে। চীনা শ্রমিকরাই সেখানে গিয়ে পরিকাঠামো উন্নয়নে হাত লাগাচ্ছেন। হাজার হাজার চীনা শ্রমিক ইতালি ও চীনে। আর সড়ক, রেল, সমুদ্র ও পাইপ লাই বসানোর এই মেগা প্রকল্প আমেরিকাকে চ্যালেঞ্জ জানাতে না পারলেও ইরান ও ইতালিকে অনেকটাই কাবু করেছে। করোনা ভাইরাসে জর্জরিত দুই দেশ। অর্থনীতির উন্নতির জন্য তাঁরা হাত বাড়িয়েছিল চীনের দিকে। কিন্তু সেই হাত এখন করোনা ধুতেই ব্যস্ত। দুটি দেশই বিপর্যস্ত চীনা ভাইরাসে। ত্রস্ত আমেরিকাও। তাই ট্রাম্পও বলছেন ডীনা ভাইরাসের কথা।

ভারত অবশ্য প্রথম থেকেই এই এক অঞ্চল এক সড়কের বিরোধী। আমেরিকার মতো দুনিয়ার লাগাম হাতছাড়ার ভয় ভারতের নেই। ভারত বিরোধী কারণ কাশ্মীরের বিস্তীর্ণ এলাকাকে নিরাপত্তা বিঘ্নিত করে পাকিস্তানকে সঙ্গে নিয়ে চীন বানাতে চায় সড়ক ও সুরঙ্গ পথ। দিল্লি কিছুতেই সেটা করতে দিতে পারেনা। পূর্বতন সরকারের মতোই দিল্লির বর্তমান সরকার চীনের যাবতীয় অনুরোধ ও উপরোধ বাতিল করে দিয়েছে। নিজেদের সার্বভৌমত্বের স্বার্থেই ভারতের সেই পদক্ষেপ। 

নিজের নাক কেটে হলেও চীন চায় আমেরিকার যাত্রা ভঙ্গ করতে। নিজের দেশের নাগরিকদের স্বার্থ নিয়ে মোটেই চিন্তিত নয় চীন। কমিউনিস্ট এই দেশটি আগেও দেশের স্বার্থে নিজের দেশের মানুষদেরই জীবনকে তুচ্ছ প্রমাণ করেছে। নিজেদের ব্যবসায়িক স্বার্থে গোটা দুনিয়াকে কলুষিত করে তুলেছে শস্তার চীনা সামগ্রীর মাধ্যমে। শিসাযুক্ত খেলনা শিশুদের ভবিষ্যতকে দুর্বিসহ করে তুলছে। চীনের বাজার দখলের খেলায় সবচতেয়ে বেশি ক্ষতি হচ্ছে পরিবেশের। তাই গোটা দুনিয়ার পরিবেশবিদরাই চীনের এই মনোভাবের বিরোধী। বহুদেশ চীনা সামগ্রীকে বর্জন করতে শুরু করেছে। কিন্তু পরিবেশ বা নাগরিকদের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে বাজার ও আধিপত্য দখলে এখন মরিয়া চীন। আমেরিকার সঙ্গে লড়তে গিয়ে চীনের এই বিপজ্জনক খেলা ভারত আগেই ধরতে পেরেছে। এখন দেখার করোনা পরবর্তী পরিস্থিতিতে ইতালি, ইরান-সহ অন্যান্য দেশ বেজিং সম্পর্কে কী মনোভাব নেয় !

সূএ: আন্তজাতিক  মিডিয়া বিশ্লেষণ থেকে প্রাপ্ত

নি এম/  

 
 
 
   
  Print  
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
আরও খবর

 
 
 

 

Editor & Publisher : Sukriti Mondal.

E-mail: eibelanews2022@gmail.com

a concern of Eibela Ltd.

Request Mobile Site

Copyright © 2024 Eibela.Com
Developed by: coder71