সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
সোমবার, ২৮শে মাঘ ১৪৩১
সর্বশেষ
 
 
ইতিহাসের অন্যতম উপেক্ষিত বীর নায়ক মহারানা প্রতাপ’র জন্মজয়ন্তী দিবস 
প্রকাশ: ০৪:৫৮ pm ১২-০৫-২০২০ হালনাগাদ: ০৪:৫৮ pm ১২-০৫-২০২০
 
এইবেলা ডেস্ক
 
 
 
 


সৌর্যে, বীরত্বে পরিপূর্ণ এক হিন্দু রাজা সম্পর্কে আপনাদের জানাবো যাকে দেখে ভয়ে সাম্রাজ্যবাদী মুঘলরা কাঁপতো। এই সাহসিকতার কারণে ভারতের ইতিহাসে তাঁর নাম অমর হয়ে আছে। তিনি হলেন রাজপুত সন্তান মহারানা প্রতাপ সিং।

ভারতের তথাকথিত বিকৃত ইতিহাসের পাঠ্যপুস্তকে সাম্রাজ্যবাদী অত্যাচারী মুঘল রাজাদেরকে ইতিহাসের সেরা নায়ক হিসেবে দেখানো হয়। যেন মুঘলরা ভারতবাসীদের ত্রাতা ও উদ্ধারকর্তা। বেশ কিছু মহাত্মা ঐতিহাসিক সত্যানুসন্ধানে এগিয়ে না আসলে আমরা হয়তো এসব জানতেই পারতাম না।

মহারানা প্রতাপ ৯ ই মে ১৫৪০ সালের মেওয়ারের কুম্ভলগড় দূর্গে (বর্তমানে এই প্রদেশ ভারতের রাজস্থান রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত) শিশোদিয়া রাজপুত রাজবংশে জন্মগ্ৰহন করেন।

মহারানা প্রতাপ ছিলেন রাজপুত রাজা যিনি মুঘল সম্রাট আকবরের অধীনতা গ্রহণ করেননি। আকবরের সেনাবাহিনী তার মোকাবিলা করতে না পারায় কয়েকবার পালিয়েও যায়। হলদিঘাটির যুদ্ধ সম্পর্কে সকলেই জানে, বিখ্যাত এই যুদ্ধে মহারানা প্রতাপ পনেরো হাজার সৈন্য নিয়ে প্রায় পচাঁশি হাজার মুঘলদের বিরুদ্ধে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ করেছিলেন। হলদিঘাঁটির যুদ্ধের পর ১৫৮২ সালের অক্টোবর মাসে আরো একটি যুদ্ধ হয় যার নাম দিবের যুদ্ধ। এ সম্পর্কে তথাকথিত ইতিহাস বইগুলোতে খুব কমই লেখা রয়েছে। এই যুদ্ধে মহারানা প্রতাপ ও মুঘল সেনার মধ্যে হয়েছিলো। এ লড়াইয়ে মুঘল সেনার বিরুদ্ধে একদিক থেকে মহারানা প্রতাপ নিজে নেতৃত্ব দেন এবং অন্যদিকে নেতৃত্ব দিয়েছেন পুত্র অমর সিং।

বিজয়া দশমীর দিন মা দুর্গার আশীর্বাদ নিয়ে মা ভবানীকে স্মরণ করে শুরু হয় মুঘল বিনাশের পর্ব। ভীষণ যুদ্ধে মুঘলদের পরাস্ত করেছিলেন। মহারানা প্রতাপের ছেলে অমর সিং ছিলেন ভাল একজন যোদ্ধা। তিনি মুঘল সেনাপতির উপর এত প্রবল শক্তির সাথে তীর ছোড়েন যে ঘোড়া সহ সেনাপতির বুক চিঁড়ে তা মাটিতে গেঁথে যায়। অন্যদিকে মুঘলদের নেতৃত্বদানকারী বেহলল খানকে ঘোড়া সমেত দু-টুকরো করে দেন মহারানা প্রতাপ। যুদ্ধে মুঘল সেনা পরাস্ত হয় এবং বেঁচে থাকা সেনা মহারানা প্রতাপের কাছে আত্মসমর্পণ করে। এভাবেই মহারানা প্রতাপ বিদেশাগত মুঘলদের সঙ্গে অনেক কঠিন যুদ্ধ করেছেন কিন্তু পরাজিত হননি৷ সম্রাট আকবরের অনেক স্বপ্নই মহারানা প্রতাপ ধূলিসাৎ করে দেন৷

মহারানা প্রতাপ প্রায় ৭ ফুট ৫ ইঞ্চি লম্বা ছিলেন এবং তিনি প্রায় ১১০ কেজির কবচ পরতেন, কিছু জায়গায় কবচের ওজন ২০৮ ​​কেজিও লেখা আছে। তিনি ২৫-২৫ কেজির ২টি তলোয়ারের ভিত্তিতে যে কোনও শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতেন। তাঁর কবচ ও তরোয়ালগুলি রাজস্থানের উদয়পুরের একটি যাদুঘরে সংরক্ষিত রয়েছে।

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হিন্দু বীরযোদ্ধা মহারানা প্রতাপ সিং সম্পর্কে বলেছেন-

“তোমার আসন শূন্য আজি,
হে বীর পূর্ণ কর ঐ যে দেখি বসুন্ধরা কাঁপল থরথর। বাজল তূর্য আকাশ পথে,
সূর্য আসেন অগ্নিরথে, আকাশপথে,
এই প্রভাতে দখিন হাতে বিজয়খড়্গ ধর।
ধর্ম তোমার সহায়, তোমার সহায় বিশ্ববাণী।
অমর বীর্য সহায় তোমার, সহায় বর্জ্রপাণি।
দুর্গম পথ সগৌরবে, তোমার চরণচিহ্ন লবে, সগৌরবে। চিত্তে অভয় বর্ম, তোমার বক্ষে তাহাই পর।”

নিজ মাতৃভূমির স্বাধীনতার জন্য আত্মবলিদানকারী, সাহস আর বীরত্বের প্রতীক স্বাভিমানী দেশভক্ত মেওয়ারের মহানায়ক মহারানা প্রতাপ সিংহের ৪৮০তম জন্মজয়ন্তী তে জানাই শ্রদ্ধাঞ্জলি ও শতকোটি প্রনাম।

নি এম/

 
 
 
   
  Print  
 
 
 
 
 
 
 
 
আরও খবর

 
 
 

 

Editor & Publisher : Sukriti Mondal.

E-mail: eibelanews2022@gmail.com

a concern of Eibela Ltd.

Request Mobile Site

Copyright © 2025 Eibela.Com
Developed by: coder71