মাস চারেক ধরে জ্বলছে অস্ট্রেলিয়া। দাবানলে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে বিস্তীর্ণ বনভূমি। তথ্য বলছে মারা গিয়েছে ৫০ কোটি পশু-পাখি। সর্বোচ্চ চেষ্টার পরেও আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি উদ্ধারকারীরা। এই বিপর্যয়ের দায় নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করলেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন। তিনি বলেন, “আরও সাবধান হওয়া উচিত ছিল আমার। গোড়া থেকেই আরও বেশি গুরুত্ব দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করতে হতো আগুন।”
এই পরিস্থিতির জন্য দেশবাসী সরকারের জলবায়ু নীতির সমালোচনায় করেছেন। সে সমালোচনাও তিনি গ্রহণ করে স্বীকার করেছেন, “যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হয়নি প্রথম থেকে।” তবে এই স্বীকারোক্তির পরেও অবশ্য সমালোচকদের আক্রমণ থেকে মুক্তি পাননি তিনি। কারণ গত মাসেই তিনি ক্রিসমাসের ছুটি কাটাতে হাওয়াই দ্বীপে চলে গিয়েছিলেন। তখন অস্ট্রেলিয়া অগ্নিদগ্ধ। তা সত্ত্বেও তিনি নিজের ছুটি বাতিল করেননি বলে সমালোচনা জানিয়েছিলেন অনেকে। এর জেরে অবশ্য তড়িঘড়ি ফিরে এসেছিলেন তিনি। কিন্তু তাতেও কমেনি ক্ষোভ।
পরবর্তীকালে ক্ষতিগ্রস্ত ও দগ্ধ এলাকা ঘুরে দেখতে গিয়ে প্রবল ক্ষোভের মুখে পড়েন মরিসন। কেউ তাঁর সঙ্গে হাত মেলাতে অস্বীকার করেন, কেউ আবার সরাসরি মুখের উপরে বলে দেন, “মূর্খ প্রধানমন্ত্রী! আপনি এখান থেকে একটাও ভোট পাবেন না।” অনেকের মতে প্রধানমন্ত্রী দিব্যি বুঝতে পারছিলেন যে তিনি জনসমর্থন হারাচ্ছেন। সেই কারণেই স্বীকারোক্তির পথ ধরেছেন তিনি।
এখনও পর্যন্ত এই আগুনে ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে অনেকেই দমকলকর্মী। অরণ্যের আগুনের সঙ্গে লড়াই করতে গিয়ে তাঁরা প্রাণ হারিয়েছেন। তাই স্বীকারোক্তির পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, “এই গ্রীষ্ম অত্যন্ত শুষ্ক ও খর। এটা প্রথম থেকেই বুঝেশুনে নিতে হতো। সাবধানতা অবলম্বন করতে হতো। সেটা করা হয়নি। আমাদের জলবায়ু নীতিও এর জন্য দায়ী।”
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মরিসন বলেন, “পরিবেশ বাঁচাতে হাতে হাত ধরে কাজ করতে হবে।”
প্রসঙ্গত, প্যারিস জলবায়ু চুক্তি অনুযায়ী, ২০০৫ সালে ২৫ থেকে ২৮ শতাংশ কার্বন নিঃসরণ কমানোর লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছিল আমেরিকাকে। এ জন্য সময় দেওয়া হয়েছিল ২৫ বছর। সেই সময় পূরণ হতে এখন বাকি আর মাত্র ১০ বছর। যে ভাবে এগোচ্ছে, তাতে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অস্ট্রেলিয়া লক্ষ্য পূরণে সমর্থ হবে কিনা, সে নিয়ে বেশ সন্দেহ আছে।
নি এম/
Editor & Publisher : Sukriti Mondal.
E-mail: eibelanews2022@gmail.com